মো. জাহিদুর রহমান >>
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্কুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডে প্রশংসিত হয়েছেন। অনেকে বিভিন্নরকম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছেন। নেটিজেনরা তাদেরকে নিয়ে ভালো মন্দ বিভিন্ন মন্তব্যও করেছেন। এমন কি তাদের অশালীন চলাচল নিয়ে অপ্রত্যাশিত শব্দও উচ্চারণ করতে দ্বিধা করেনি। এদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সমসলোচিত হয়েছেন ফারজানা সিথি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করেছিলেন, আপনারা কি কোটার পুলিশ?’ এজন্য তিনি বিশেষিত হয়েছিলেন অগ্নিকন্যা, কুইন, বাঘিনী ও আয়রন লেডি হিসেবে। তবে সম্প্রতি সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে ফের আলোচনায় এসেছেন ফারজানা সিথি নামের এই তরুণী।
গত
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) শাহবাগ থানায় সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তার সাথে ঐ
নারীর বাকবিতন্ডা লিপ্ত হতে দেখাগিয়েছে। কিন্তু সেনা কর্মকর্তা অত্যন্ত
ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে তার কথা শুনেছে। এরপরই প্রশ্ন উঠে কে এই ফারজান সিথি?
ফেসবুক
প্রোফাইল থেকে জানা গেছে, ফারজানা সিথির বাড়ি যশোর। তিনি আন্তর্জাতিক
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘দ্য হাংগার প্রজেক্ট, বাংলাদেশ’এর বরগুণা সদরের
সাধারণ সম্পাদক। দ্যহাঙ্গার প্রজেক্ট ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর লক্ষ 25
বছরের মধ্যে বিশ্ব ক্ষুধা দূর করার বিবৃত লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত, একটি
সংস্থা যা বিশ্ব ক্ষুধার টেকসই অবসানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আফ্রিকা,
এশিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকায় এটির চলমান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটি স্বাস্থ্য , শিক্ষা , পুষ্
তবে ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ফারজানা সিথির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেন। মূলত তিনি গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্স’এর ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফারজানা সিথিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে প্রচার করা হলেও, ১৫৮ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক তালিকার নাম পাওয়া যায়নি।
এদিকে সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে ফারজানার উগ্র আচরণের ভিডিও রীতিমত ট্রল ও মিম ম্যাটেরিয়ালে পরিণত হয়েছে। তার এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের সমালোচনা করতে দেখা যায় নেটিজেনদের। এরই মধ্যে সিথির ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও শুরু হয়ে গেছে সমালোচনা। তার পোশাক, চলাফেরা ও জীবন-যাপন নিয়ে করা হচ্ছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তার বিভিন্ন সময়ের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিভিন্ন নির্মাতা ও ফটোগ্রাফি হাউজের বিভিন্ন ফটোশুট ও ভিডিওগ্রাফিতে অংশ নিতে দেখা যায় ফারজানা সিথিকে।
তবে এক ভিডিও বার্তায় সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে অশোভন আচরণের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ফারজানা সিথি। তিনি বলেন, ‘সবাইকে বলছি আমার ওই দিনের ব্যবহার নিয়ে খুবই দুঃখিত। এই রকম ব্যবহার আমার কোনোভাবেই করা উচিত হয়নি। আমি বাংলাদেশ আর্মির কাছে খুবই দুঃখিত। কিন্তু সিচ্যুয়েশন, টাইমিং এবং সেখানে যে কার্যকলাপ হতে যাচ্ছিল তার ব্যাপারে আমি সচেতন ছিলাম না। আবেগে মাথা গরম করে ফেলেছিলাম বুঝতে পারিনি।’
অন্যদিকে, উসকানি ও অপমানের মুখেও পেশাদারিত্ব বজায় রাখার জন্য প্রশংসায় ভাসছেন সেই সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন আশিক। সেনাবাহিনীর প্রধানের কাছ থেকে পেলেন সম্মানসূচক ‘সেনা গৌরব পদক’।