মিলটন হোসেন খান, গোপালগঞ্জ:
গোপালগঞ্জের
কাশিয়ানী উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের ডোমরাকান্দি গ্রামে ‘অজানা রোগে’ গত
১০ দিনে ১৪টি গরু মারা গেছে।অসুস্থ হয়ে পড়েছে বেশ কিছু গরু। বর্তমানে গ্রামের গরু মালিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এলাকায় রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কাও করছেন এলাকাবাসী।
রবিবার (৭ জুলাই ) বিকাল পর্যন্ত ওই গ্রামের স্থানীয় জসিম
মোল্লার ৪টি, ফাকু মোল্লার ২টি, সুখী বেগমের ১টি, ইয়ার আলি মোল্লার ২টি,
হাফিজুর রহমানের১টি, ইমরান লস্কারের ১টি, আলমগীর মোল্লার ২টি, শাহাদৎ শেখের
১টি সহ আরো ৩ থেকে ৪টি , গরু মারা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শাহিন মোল্লা ইমতাজ শেখ, ইমদাদ আলি বুকদাত মিয়া সহ অসুস্থ গরু মালিকরা পরিচর্যা করছেন।
গরুর মুখ দিয়ে ফেনা আসছে ও লালা ঝরছে। উঠে দাঁড়াতেও পারছে না। ছেড়ে দিয়েছে খাওয়া-দাওয়া।
ভুক্তভোগী'রা
বলেন- কোন ওষুধই কাজে আসছে না। হাতুড়ে ডাক্তার এনে ঔষধ ও ভ্যাকসিন দেওয়া
হয়েছে, যার মূল্য বাবদ দুই থেকে তিন হাজার টাকা নিচ্ছেন।গরু সুস্থ হচ্ছে
না।বরং একের পর এক মারা যাচ্ছে গরু।
এমনাবস্থায়
মাহমুদপুর ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডার (এলএসপি)
হাফিজুর রহমানকে জানালে তিনি তেমন কোন গুরুত্ব দেয়নি এবং উপজেলা
প্রানীসম্পদ অফিসেও বিষয়টি জানায়নি।
উপায়ন্ত
না পেয়ে উপজেলা প্রানীসম্পদ অফিসের উপসহকারী মোঃ নেছারউদ্দীনকে অসুস্থ
গরুর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য জানান ভুক্তভোগীরা। অনেক অনুরোধ করে আনলেও গুনতে
হয় গরু প্রতি দুই থেকে তিন হাজার টাকার উপরে।এতেও বাঁচাতে পারেনি
গরুগুলি।
এতবেশী টাকা নেওয়া ও আক্রান্ত গরুর বিষয়ে
মুঠোফোনে জানতে চাইলে কালবেলাকে তিনি জানান - বাহিরে অসুস্থ গরু দেখতে
গেলে বোঝেনইতো হাদিয়া লাগে। অফিস থেকে কোন খরচ দেওয়া হয় না। আর ভ্যাকসিন
বাহির থেকে কিনতে হয়। বর্তমানে সরকারি ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই।
এমন
পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার ৪ জুলাই সন্ধ্যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল
ইসলাম ও ভুক্তভোগী শাহিন মোল্লা উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা পৃথ্বীজ
কুমার দাসকে মুঠো ফোনে গরু মারা যাওয়া, সরকারীভাবে
ডাক্তার না আসা এবং অসুস্থ গরুর বিষয়ে পরামর্শ চাইলে তিনি সব দায় চাপিয়ে
দেন ভুক্তভোগীদের ঘাঁড়ে।
তিনি বলেন এর আগে কেন ভ্যাকসিন দেননি। সমস্যা বেশী মনে হলে উপজেলায় নিয়ে আসতে বলেন। অথচ অসুস্থ গরু কিভাবে নিবে? এমন উত্তরে বলেন বেসরকারি গ্রাম্য ডাক্তারের পরামর্শ ও ভ্যাকসিন বাহির থেকে ক্রয়করে চিকিৎসা দিতে। সরকারি ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই।
কাশিয়ানী
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পৃথ্বীজ কুমার দাস সরেজমিনে না
যাওয়ার বিষয়ে স্বীকার করে বলেন-আমি শুনেছি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউপি
সদস্যের মাধ্যমে। এর আগে আমাকে কেউ জানায়নি জনবল সংকট আর ভেট ( পশুচিকিৎসক)
আমি একজন। তবে গত রবিবার রাতে আক্রান্ত এলাকায় যেয়ে অসুস্থ গরু মালিকদের
চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস্থ করেছি।